পার্থে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ভারতের ৫ উইকেটের হারে দুই নম্বর গ্রুপে সেমির লড়াই কিছুটা জটিল হয়ে গেছে। এই ম্যাচের ফলাফলে পাকিস্তানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে গ্রুপে লড়াই বেশ জমে উঠেছে। এক নেদারল্যান্ডস বাদে বাংলাদেশসহ এই গ্রুপের বাকি দলগুলোর সেমিতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আগামীকাল বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। দুদলের জন্যই ম্যাচটি সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ম্যাচের ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে দুদলের সেমিফাইনাল ভাগ্য। যারা জিতবে তারাই এগিয়ে যাবে সেমিফাইনালের পথে। কিন্তু যদি বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে বৃষ্টি হয় তাহলে কী হবে?
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ম্যাচটি হবে অ্যাডিলেইডে। আবহাওয়া বার্তা বলছে, সেখানে ম্যাচের দিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। তাই বৃষ্টিতে যদি ম্যাচটি ভেসে যায়, তাহলে বাংলাদেশ-ভারতের ভাগ্য ঝুলে যাবে।
ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেলে দুদল পাবে একটি করে পয়েন্ট। তখন দুদলের পয়েন্ট হবে সমান ৫। এক্ষেত্রে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারত ও বাংলাদেশ দুদলকেই জিততে হবে। দুদল জিতে গেলেও মেলাতে হবে যদি-কিন্তুর হিসাব।
দুদল যদি শেষ ম্যাচে জয় পায় তাহলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৭ করে। তখন রান রেটে যে এগিয়ে থাকবে তাদের সেমিতে যাওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকবে।
এখন পর্যন্ত মূল পর্বে সবার তিনটি করে ম্যাচ শেষ হয়েছে। তিন ম্যাচ শেষে গ্রুপ ‘এ’ এবং ‘বি’ থেকে কোনো দলই পুরো ৬ পয়েন্ট পায়নি। বেরসিক বৃষ্টিতে সর্বোচ্চ ৫ পয়েন্ট করে পেয়েছে ‘এ’ গ্রুপের নিউজিল্যান্ড এবং ‘বি’ গ্রুপের দক্ষিণ আফ্রিকা। এ দুদল ছাড়া প্রতিটি দলই হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে।
এর মধ্যে সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণে লড়াই বেশি জমে উঠেছে ‘বি’ গ্রুপে। যেখানে আছে বাংলাদেশের নাম। সবার মতো তিন ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের সামনেও সেমিফাইনালে যাওয়ার সমান সুযোগ রয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ।
সমীকরণ ১ : মূল পর্বে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলে দুই জয় ও এক হারে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪। এই মুহূর্তে টেবিলের তিন নম্বরে আছে সাকিব আল হাসানের দল।
সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশের পরের দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তান। এই দুই প্রতিপক্ষকে হারাতে পারলেই সরাসরি সেমিফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ। যদি একটি ম্যাচেও বাংলাদেশ জয় পায় তাহলেও সম্ভাবনা আছে পরের ধাপে যাওয়ার। সে জন্য কিছু সমীকরণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।
সমীকরণ ২
: বাংলাদেশ যদি নিজেদের পরের ম্যাচে ভারতের কাছে হারে তখন বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৪, ভারতের হবে ৬। সেক্ষেত্রে ভারত যদি নিজেদের পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে হারে এবং একই ভাবে বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানকে হারাতে পারে তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উঁকি দেবে। কারণ তখন বাংলাদেশ ও ভারত দুদলেরই সমান ৬ পয়েন্ট করে হবে। তাতে বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতে রানরেটে এগিয়ে থাকতে পারে, তাহলে যেতে পারবে পরের ধাপে।
সমীকরণ ৩ : অন্যদিকে বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারাতে পারে তাহলে বাংলাদেশের সম্ভাবনাটা বেশিই থাকবে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারিয়ে যদি শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে যায় তাহলেও হিসাবটা সহজ হয়ে পড়বে। দক্ষিণ আফ্রিকা যেভাবে উড়ছে তাতে পাকিস্তানকে হারানো তাদের জন্য কঠিন কিছু হবে না।
তবে যে ম্যাচেই বাংলাদেশ জিতুক না কেন অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে বড় ব্যবধানে জিতে রান রেট বাড়িয়ে নেওয়া। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে থাকলেও রান রেটের অবস্থা খুবই বাজে। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে বাংলাদেশের রান রেটের ১২টা বেজেছে। এই মুহূর্তে সাকিবদের রান রেট (-১.৫৩৩)। সেখানে সমান পয়েন্ট নিয়ে দুই থাকা ভারতের রানরেট (০.৮৪৪)। সুতরাং সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে যেমন—জিততে হবে তেমনি রান রেটেও নজর দিতে হবে সাকিব আল হাসানদের।